নাম-পেশা বদলে নওগাঁয় আত্মগোপনে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা
নাম-পেশা বদলে নওগাঁয় আত্মগোপনে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ইসাবা গ্রুপের (সামরিক শাখা) মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. সানোয়ার হোসেনকে (৪৪) গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
এন্টি টেররিজম ইউনিটের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে নওগাঁর পত্নীতলা থানার নজিপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, গ্রেপ্তার সানোয়ার হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মল্লিকপুর এলাকার চাঁদপাড়ার মৃত. এরশাদ আলীর ছেলে।
তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে এন্টি টেররিজম ইউনিট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানায় ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল দায়ের ১৬নং মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সানোয়ার হোসেনের ওপর নজরদারি শুরু করে।
এক পর্যায়ে এটিইউর একটি চৌকস দল জানতে পারে, সানোয়ার হোসেন নওগাঁর পত্নীতলা থানার ছোট চাঁদপুর এলাকায় আব্দুল্লাহ নামে আত্মগোপন করে আছে। সেখানে তিনি রাজমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করেন। পাশাপাশি ভেড়া লালন-পালন করেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় এটিইউ দল ইসাবা গ্রুপের (সামরিক শাখা) সদস্য সানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার সানোয়ার হোসেন ২০০০ সালের পরে শায়খ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে জেএমবির সদস্যভূক্ত হয়। তখন তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে নাচোল ও গোমস্তাপুরে জেএমবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০৭ সালে ২৯ মার্চ শায়খ আব্দুর রহমানের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির কিছু দিন পর মাওলানা সাইদুর রহমান জেএমবির আমির হয়। পরবর্তীতে তারা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। তাদের আন্তঃকোন্দলের কারণে ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল জেএমবির স্বঘোষিত আমির সালমানকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার খুলশী বোরিয়া আমবাগান এলাকায় কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করে। তার মাথা ও দেহ দুই জায়গায় ফেলে দেয়।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তার আ. শাকুর ও জাহাঙ্গীরের দেওয়া তথ্য মতে, মহানন্দা নদীর তীর থেকে পুঁতে রাখা সালমানের মাথাটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার সানোয়ার হোসেন (৪৪) ১০ বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থেকে পুরাতন জেএমবিকে সক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। তাছাড়া গোমস্তাপুর থানার একটি মামলায় অভিযুক্ত তিনি। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত সালমান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সানোয়ারসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
No comments