Header Ads

Study abroad in Spain

সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য রিমন, রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে বেপরোয়া

 সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য রিমন, রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে বেপরোয়া


নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বাবার কোলে থাকা শিশুকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত রিমন, মহিন ও রহিম স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেগমগঞ্জে মূলত দুটি সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। যার একটির নেতৃত্বে আছেন ৪০টির অধিক মামলার আসামি সুমন ওরফে খালাসি সুমন। অপরটির নেতৃত্বে রয়েছেন সম্রাট বাহিনীর সম্রাট। তার বিরুদ্ধেও মামলা আছে ৪০টির অধিক। রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তারা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। সুমন বাহিনীর হাজিপুর ইউনিয়ন অংশের দায়িত্ব পালন করেন সন্ত্রাসী রিমন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাজিপুর ইউনিয়নের এক বাসিন্দা  বলেন, সন্ত্রাসী রিমন ও তার সহযোগীরা বেগমগঞ্জের সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তারা পূর্ব হাজিপুর গ্রামের মালেকার দোকানের সামনে নিয়মিত আড্ডা দিতো। এই এলাকায় চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, মাদক, জমির মাটি বিক্রি করা থেকে শুরু করে নানান অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।

রিমন (২৫) উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের দানিজ বেপারী বাড়ির মমিন উল্লাহর ছেলে। তার সহযোগী সবাই হাজীপুর এবং দুর্গাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাজীপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা  বলেন, রিমন ও তার বাহিনীর লোকজন হাজীপুর ইউনিয়নে আড্ডা দেয়। তাদের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এলাকাবাসীর কারও সঙ্গে কোনো ঘটনা ঘটলে তারা একটি পক্ষ নিয়ে অন্য পক্ষের ওপর চড়াও হয়, বাড়িঘরে হামলা করে, জিম্মি করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিমনের এক আত্মীয়  বলেন, রিমন ও তার সহযোগীরা সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। এদের কারো দলের কোনো পদে নেই। তারা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের অনুসারী। এ কারণে এলাকার মানুষজনও তাদের ভয়ে মুখ খুলতে চান না। রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে তারা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। আতঙ্কে আছে পুরো এলাকার মানুষ।

এসব বাহিনীকে রাজনৈতিক নেতারাই নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. এ বি এম জাফর উল্লাহ। 

তিনি বলেন, দলীয় কোন্দলের কারণেই সন্ত্রাসী বাহিনীর অনুসারীরা এলাকায় অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যায়। রাজনৈতিক নেতারা যদি সন্ত্রাসীদের ব্যবহার না করতো তবে এসব সন্ত্রাসীদের শেকড় এতো গভীরে যেত না।

বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, রিমনের বিরুদ্ধে থানায় আটটি মামলা আছে। প্রায় সবকটি মামলাই মারামারির। অভিযুক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার শেষে তাদের নামে আগের মামলা আছে কিনা তখন বলা যাবে।

বর্তমানে কোনো বাহিনী নেই উল্লেখ করে বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিব বলেন, একটা সময় বেগমগঞ্জে অনেকগুলো বাহিনী ছিল। সব থেকে বড় বাহিনী ছিল সম্রাট বাহিনী ও সুমন বাহিনী। সম্রাট বাহিনীর প্রধান সম্রাট দেশ ত্যাগ করেছে। তার গ্রামের বাড়ি হাজীপুর ইউনিয়নে। আমার জানামতে সুমন বাহিনীর প্রধান সুমন ওরফে খালাসি সুমন কারাগারে রয়েছে।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম  বলেন, হাজীপুর ইউনিয়নের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সন্ত্রাসীদের শেকড় উপড়ে ফেলতে পুলিশ কাজ করছে। কোথাও কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অল্প সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনছে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল (বুধবার) বিকেলে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে থাকা শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়া নিহত হয়। এ সময় শিশুটির বাবা সৌদিপ্রবাসী আবু জাহেরও গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় মো. রিমনকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।




No comments

Theme images by konradlew. Powered by Blogger.