Header Ads

Study abroad in Spain

ফরিদপুরে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৯

 ফরিদপুরে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৯


ফরিদপুরের সালথায় রাস্তা কাটা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৯ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দীন (৪৪) ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেনের (৪২) মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। ওই দুই নেতার বাড়ি মাঝারদিয়া ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে।

তিন মাস আগে নওপাড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে একটি রাস্তা বানানোর উদ্যোগ নেন কামাল। কিন্তু গিয়াসের সমর্থকরা তাদের জমির ভেতর দিয়ে ওই রাস্তা যাওয়ায় এ কাজে বাধা দেন। একপর্যায়ে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় কাগদী বাজারে কামালের কয়েকজন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে গিয়াসের সমর্থকরা নানান ধরনের টিপ্পনি কেটে উত্তেজিত করে। এ নিয়ে ওই বাজারে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ২৯ জন আহত হন। পরে পুলিশ এসে শর্টগানের ১০টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ছয়জনকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দীন বলেন, গ্রামে রাস্তা কাটা নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে আমার লোকজনের বিরোধ চলছিল। গতকাল বিকেলে কামালের সমর্থকরা আমার বাড়ির ওপর এসে আমার সমর্থক ইলিয়াস শেখকে পিটিয়ে আহত করে। পরে আমার সমর্থকরা প্রতিবাদ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে ইলিয়াস শেখ, শহিদুল শেখ, মেহেদী শেখ, ইব্রাহিম মোল্যা, নাসির মোল্যা, রিপন মাতুব্বর ও আমিনুর মাতুব্বরসহ আমার অন্তত ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। 

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো কামাল হোসেন বলেন, রাস্তা কাটাসহ গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে আমাদের অনেক দিন ধরে বিরোধ চলছিল। বুধবার বিকেলে আমার সমর্থক আহাদ মাতুব্বর, হেমায়েত মাতুব্বর, ইউসুফ মোল্লা ও দেলোয়ার মোল্লা স্থানীয় কাগদী বাজার থেকে পেঁয়াজ বিক্রি করে ফেরার পথে গিয়াসের বাড়ির সামনে গেলে তাদের ওপর হামলা চালায় তার (গিয়াসের) সমর্থকরা। এ সময় তারা রড ও হাতুড়ি দিয়ে আমার সমর্থকদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ নিয়ে পরে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আমার অন্তত ১৪ সমর্থক আহত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে আহাদ মাতুব্বর, হেমায়েত মাতুব্বর, ইউসুফ মোল্লা ও দেলোয়ার মোল্লা, রিপন মাতুব্বরসহ উভয় পক্ষের নয়জনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে ইলিয়াস শেখ, শহিদুল শেখ, মেহেদী শেখ, ইব্রাহিম মোল্লা, নাসির মোল্লা ও আমিনুর মাতুব্বরকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা বেশির ভাগ দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, রাস্তা নির্মাণ নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ১০টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পরিবেশ বর্তমানে শান্ত রয়েছে।


No comments

Theme images by konradlew. Powered by Blogger.