উদ্যোক্তাদের বের করে আনতে, প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা হবে।
উদ্যোক্তাদের বের করে আনতে, প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা হবে।
ঋণ খেলাপি দেশের বড় সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, এই সমস্যা ভারত, চীনসহ বিশ্বের সব দেশেই আছে। আমাদের দেশে যারা প্রকৃত ঋণ খেলাপি তাদের জন্য এক্সিটওয়ে বের করতে হবে। এসব উদ্যোক্তাদের বের করে আনতে, প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা হবে।
চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, পিপিপি-ই ভবিষ্যৎ, আমাদের এই পথে যেতে হবে।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) ‘ভিশন ২০৪১ অর্জনে পিপিপির ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতের এ উপদেষ্টা বলেন, পিপিপি ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। পাবলিক পার্টনারশিপ প্রোজেক্টগুলোতে আমরা জোর দিচ্ছি। বর্তমানে এ রকম ৭৬টি প্রোজেক্ট হাতে রয়েছে। এর মধ্যে ১টির কাজ শেষ হয়েছে। জাপানের সঙ্গে ৩ থেকে ৪টির কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া কোরিয়ার সঙ্গেও ৩ থেকে ৪টি প্রজেক্টের কাজ চলছে। কাজগুলো শেষ হলে আমরা এর সুফল পাব।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ ছিল না। এটি ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। তখন আমরা শূন্য রিজার্ভ দিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। সে সময় জি টু জি পদ্ধতিতে আমরা পণ্য আমদানি করতাম। তখন আমরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বেসরকারি খাতে এক্সপোর্ট করার বিষয়টি বলা হলো। বঙ্গবন্ধু বললেন এটি একটি ভালো উদ্যোগ, তবে ৬০ ভাগ ট্র্যাডিশনাল পণ্য এবং ৪০ শতাংশ নন-ট্র্যাডিশনাল পণ্য রপ্তানি করতে হবে। পাকিস্তান আমলে আমরা কোনো দিন চা রপ্তানি করিনি। তবে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে আমরা চা ও মধুসহ আরও অনেকগুলো নন-ট্র্যাডিশনাল পণ্য রপ্তানি করেছিলাম।
দেশের বিদ্যুৎ খাতের অর্জন তুলে ধরে সালমান এফ রহমান বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পর সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট থেকে দেশের চাহিদার পূরণ করেছে। এক্ষেত্রে ৫৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে বেসরকারি খাত। বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের মতোই পিপিপি বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারে এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহিম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসীম উদ্দীন।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, পিপিপির ধারাটি ৭০ দশকে বঙ্গবন্ধুর আমলেই শুরু হয়েছিল। বারডেম হসপিটালে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ রয়েছে। ২০০৯ সালে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর পিপিপি বিষয়টি জাতীয় বাজেটে তুলে ধরা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিবিতে পিপিপির ৭৭টি প্রজেক্ট তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১টি প্রকল্পের কাজ সুন্দরভাবে চলছে। আরও ৭টি প্রকল্প চলমান। বাকিগুলো কার্যক্রম চলার উপক্রম হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দেশের অর্থনীতিতে সরকারি বিনিয়োগের অবদান ছিল ১৫ শতাংশ। একই সময়ে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ৮৫ শতাংশ। ইতিমধ্যে বেসরকারি খাত অনেকটা পরিণত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের দেশে পিপিপি এক ধরনের অনাস্থার তৈরি হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সরকার বিশ্বাস করতে পারে না, আবার বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা সরকারকে বিশ্বাস করতে পারে না। এ রকম যেসব অনাস্থা রয়েছে তা দূর করতে হবে। এছাড়া ইমোশনাল সিদ্ধান্ত থেকে আমাদের বের হতে হবে। কারণ আমরা পিপিপিতে অনেক বেশি সফল নয়। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হলে আমাদের ঢাকার যানজট অনেক কমবে। এটা আমাদের একটি সাফল্য। এ রকম রেলসহ অনেক কিছু আমাদের দরকার। আমরা এসব কাজ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ করতে পারি।
No comments