৩৫ বছর বয়সেও যেন তার শিরোপা-তৃষ্ণা মিটছে না।
৩৫ বছর বয়সেও যেন তার শিরোপা-তৃষ্ণা মিটছে না।
ফুটবল ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় অবস্থান করছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। ৩৫ বছর বয়সেও যেন তার শিরোপা-তৃষ্ণা মিটছে না। যার প্রমাণ নিজ দেশের জার্সিতে কাতারে বিশ্বজয়ের মঞ্চ। এরপর ছিনিয়ে এনেছেন ব্যক্তিগত সেরার সব পুরস্কার। সে কারণেই ক্লাবসেরা হওয়ার দৌড়েও স্বাভাবিকভাবে তার লক্ষ্য উঁচুতেই ছিল। কিন্তু ফরাসি চ্যাম্পিয়ন পিএসজি বারবারই হোঁচট খায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসে। শুধু ক্লাবটিই নয়, টানা ৮ আসরজুড়ে চ্যাম্পিয়ন ট্রফির নাগাল পাচ্ছেন না মেসিও।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে বার্সেলোনার হয়ে ট্রফি জিতেছিলেন তিনি। এরপর ২০২১ সালে মেসি বার্সেলোনা ছাড়েন। ইতিহাস বলছে, কাতালান ক্লাবটির হয়ে এর আগে কখনোই টানা দুই কোয়ার্টার ফাইনালের আগে বিদায় নেয়নি মেসিরা। মেসির সেই ইতিহাস এবার আর অক্ষুণ্ন নেই। পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর টানা দুই আসর থেকে মেসির দল কোয়ার্টারের আগেই বিদায় নিয়েছে। অর্থ্যাৎ পিএসজির জার্সিতে ইতোমধ্যে মেসি তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু তার উপস্থিতিতেও ফরাসি জায়ান্টদের গত ১০ বছরের ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙা যায়নি! ফলে সেই হতাশার বৃত্তে আরও একটি বছর যোগ হলো।
যদিও ম্যাচ হারের পর পিএসজি কোচ ক্রিস্তফ গ্যালতিয়ে ব্যর্থতা ঢাকতে নেইমারদের অনুপস্থিতির অজুহাত দিয়েছেন। অথচ নেইমার থাকাবস্থায়ও ক্লাবসেরার এই ট্রফি অধরাই ছিল। তখনও কেবল ফরাসি লিগের চ্যাম্পিয়ন হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় নাসের আল খেলাইফির দলকে। সে কারণেই প্রশ্ন উঠছে, মেসি-নেইমার-এমবাপে ত্রয়ীর এই বিশাল বাজেটের প্রজেক্ট কী এভাবেই মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবে কি-না।
কাতালান ক্লাবের হয়ে মেসি যতবারই খেলেছেন, ২০০৭ সাল বাদে প্রতিবারই কোয়ার্টার খেলেছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। কিন্তু পিএসজিতে আসার পর মেসি কখনো এ মঞ্চের দেখা পাননি। আরও পরিতাপের বিষয় হলো, চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই লেগের ম্যাচে পিএসজি সর্বশেষ গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিল ২৮ বছর আগে। ১৯৯৫ চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে এসি মিলানের বিপক্ষে। এবারের মতো সেবারও দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ গোলে হেরেছিল পিএসজি এবং দুই লেগের স্কোরও একই—১-০ ও ২-০!
নেইমার যোগ দেওয়ার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে কাছাকাছি যাওয়ার একটা সুযোগ তৈরি করেছিল পিএসজি। ২০১৯-২০ মৌসুমে এই লিগের ইতিহাসে নিজেদের সর্বোচ্চ সাফল্যের মুখ দেখে প্যারিসের ক্লাব। তবে ফাইনালে বায়ার্নের কাছে ১-০ গোলে হেরে হৃদয় ভাঙে লা প্যারিসিয়ানদের। পরের মৌসুমে আবারও শিরোপার কাছাকাছি গিয়ে বঞ্চিত পিএসজি। নিজেরাও শিরোপা জিতল না, আবার এমবাপে-নেইমারদেরও শিরোপার মঞ্চে উঠতে দিল না ম্যানচেস্টার সিটি।
এরপর গত মৌসুমে দুই গোলের লিড নিয়েও রিয়াল মাদ্রিদের কাছে বাজেভাবে ধরাশায়ী হয়েছেন মেসি-এমবাপেরা। দুঃস্বপ্নের রাত কাটিয়েছেন দলের সবাই। বিশ্বকাপ জিতে আসা মেসি এবার গতবারের চেয়ে ছিলেন বেশ ভালো ফর্মে। চোটের থাবায় ছিটকে যাবার আগ পর্যন্ত ভালো ছন্দে ছিলেন নেইমারও। আর এমবাপে তো গত কয়েক বছর ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই প্রত্যাশার পারদটা বেশ উপরের দিকেই ছিল। কিন্তু এবারেও নক আউটে এসে কুপোকাত পিএসজি। আর দুঃস্বপ্নের নাম বায়ার্ন মিউনিখ।
No comments